ঢালিউড খ্যাত ‘মিষ্টি মেয়ে সারাহ বেগম কবরীকে হারানোর এক বছর পূর্ণ হলো আজ। গত বছরের এই দিনে পাড়ি জমান অনন্তলোকে।
গত বছর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হন ঢাকাই সিনেমার এই সারেং বউ। এর পর ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে পরিবর্তন করা হয় হাসপাতাল। কিন্তু ফেরানো যায়নি এ কিংবদন্তিকে।
তার মৃত্যুতে শুধু শোবিজ অঙ্গন নয়, শোকের সাগরে ভাসে সারা দেশের মানুষ। যদিও চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষেরা এখনও বলেন, শারীরিকভাবে বাংলার কিংবদন্তি অভিনেত্রী কবরী দূরে চলে গেলেও তিনি আছেন বাঙালির হৃদয়ে। তার কর্মে। তার অভিনীত অসংখ্য চলচ্চিত্রে।
তারা মনে করেন, বহুকাল তিনি বেঁচে থাকবেন বাংলা ভাষাভাষি মানুষের মননে। সুতরাং এর জরিনা, রংবাজ এর চিনি, বধূ বিদায়ের মায়া কিংবা সারেং বউ হয়ে।
সাদামাটা বালিকা মিনা থেকে হয়ে উঠেছিলেন বাংলার কবরী। কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন শুধু অভিনয় গুণ দিয়ে। ১৯৬৪ সালে সবেমাত্র উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী থাকাবস্থায় যুক্ত হয়েছিলেন সিনেমায়। তখন আর কত বয়স! স্কুল, পড়াশোনার বাইরে একটু-আধটু নাচ করেন! অথচ সেই সময়েই প্রখ্যাত পরিচালক সুভাষ দত্তের আবদার, তাকে অভিনয় করতে হবে চলচ্চিত্রে!
মায়ের অনিচ্ছা, কিন্তু বাবার আছে সমর্থন! সেই শুরু। ‘সুতরাং’ দিয়ে! আর পেছনে ফিরতে হয়নি। চলচ্চিত্রের রঙিন দুনিয়ায় পা রেখেই মিনা হয়ে উঠেন কবরী! নতুন নাম, নতুন কাজ, নতুন চ্যালেঞ্জ!
এর পর একে একে হীরামন, সুজন সখী, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়, আগন্তুকসহ জহির রায়হানের তৈরি উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ভারতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ এ দুর্দান্ত অভিনয় করে একেবারের ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেন কবরী। চলচ্চিত্রের মানুষের কাছে ‘মিষ্টি মেয়ে’!
অসুস্থ হওয়ার ঠিক কয়েক দিন আগেই কবরী শেষ করেন তার পরিচালিত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ছবি ‘এই তুমি সেই তুমি’র শুটিং। ডাবিং ও সম্পাদনার কাজ করছিলেন। ছবিতে কবরী নিজেও অভিনয় করেছেন। সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। বর্তমানে ছবিটি আছে মুক্তির প্রতীক্ষায়।
ষাটের মাঝামাঝি থেকে সত্তর ও আশির দশক মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। শুধু অভিনয় নয়, চলচ্চিত্র পরিচালনাতেও সুনাম কুড়িয়েছেন কবরী। রাজনীতিতে নাম লিখিয়েও পেয়েছেন সফলতা। একবার হয়েছেন সংসদ সদস্য।